মোস্তাফা জব্বার এর বই সমূহ

মোস্তাফা জব্বার
লেখকের জীবনী

মোস্তাফা জব্বার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত এবং আনন্দ কম্পিউটারস ও বিজয় ডিজিটাল-এর মালিক, বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের কপিরাইট, প্যাটেন্ট ও ট্রেডমার্কের স্বত্তাধিকারী, আবাস ও আনন্দপত্র ডট ইনফো-এর সম্পাদক ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের পৈত্রিক নিবাস নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী থানার কৃষ্ণপুর গ্রামে। ১৯৪৯ সালের ১২ই আগষ্ট ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার চর চারতলা গ্রামের নানার বাড়িতে তাঁর জন্ম। তবে শিক্ষাসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট অনুসারে তাঁর জন্ম তারিখ ৩০ জুন ১৯৫১। তাঁর শিক্ষা সনদের নাম মোঃ গোলাম মোস্তাফা। বাবা আব্দুল জব্বার তালুকদার ও মা রাবেয়া খাতুন কঠোর ইচ্ছাশক্তির কারণে গ্রামের বাড়ির ২৫ কিলোমিটারের মাঝে কোনো হাইস্কুল না থাকলেও মোস্তাফা জব্বার বস্তুত প্রবল প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ এবিসি হাই স্কুলে ষষ্ঠ থেকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি ঢাকা কলেজে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর লেখাপড়া করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন, তবে শেষ করতে পারেননি। ১৯৬৬ সালে ঢাকা কলেজে পড়াশোনার সময় থেকে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। এরপর ১৯৬৮-৭৪ সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। তিনি ৭১ সালে মুজিব বাহিনীতে যোগ দেন ও মুক্তিযুদ্ধ করেন। তিনি সূর্যসেন হল ছাত্র সংসদ-এর নাট্য ও প্রমোদ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি টিএসসিতে তাঁর লেখা মুক্তিযুদ্ধের নাটক এক নদী রক্ত মঞ্চস্থ হয় যাতে শহীদ শেখ কামালও অভিনয় করেন। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি তার কাছে পাশের থানা শাল্লার ১৬১ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে। তিনি তাদেরকে শাল্লা সদর ঘুঙ্গিয়ার গাও পাঠিয়ে দিলে ওখানে তাদের অন্তত ৮১ জনকে মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করে। এই রাজাকাররা শাল্লার গ্রামগুলো পোড়ানোসহ লুটপাট ও দখলে লিপ্ত ছিলো। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৭২ সালের ১৬ জানুয়ারি সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে। এরপর তিনি ট্রাভেল এজেন্সিতেতে চাকরি করেন ও ট্রাভেল এজেন্সির অংশীদারিত্ব ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি নিজে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৯১ সালে তিনি নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত হন। একই বছর তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কম্পিউটারে বাংলা লেখা শিখতে সহায়তা করেন ও আওয়ামী লীগের ডিজিটাইজেশনে কাজ করতে থাকেন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেন ও ডিজিটাল নির্বাচন পরিচালনা করেন। ২০০৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে মিডিয়া টিম পরিচালনার দায়িত্ব দেন এবং এরপর তিনি প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির সদস্য হন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০৬ সালের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিতে তথ্যপ্রযুক্তি অংশ লিখেন ও ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত হবে এই বাক্যটি লিখেন। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৮ সালের ২রা জানুয়ারি তিনি ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করে ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারিতে আবারও ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ১৯ মে ২০১৯ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০ মে ২০১৯ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রাজনীতির বাইরে: ১৯৭৫ সালে তিনি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করেন এবং ১৯৭৫ সালেই নিজে ট্রাভেল এজেন্সির অংশীদারিত্ব ব্যবসা শুরু করেন। একই সাথে তিনি মুদ্রণ ব্যবসায় যুক্ত হন ঢাকার শেখ সাহেব বাজারে ফাতেমিয়া প্রেস ভাড়া করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি আনন্দ ভ্রমণ লিমিটেডনামে পারিবারিক ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করেন। সেই সময়ে তিনি ট্রাভেল এজেন্সি সমিতি এটাব-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮০ সালে তিনি নিজে ‘আনন্দ মুদ্রায়ণ লিঃ’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চে তিনি মাসিক নিপুণ পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং আনন্দ নামে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে বই প্রকাশনায় নিয়োজিত হন। ১৯৮৭ সালের ২৮শে এপ্রিল ম্যাকিন্টোস কম্পিউটারের বোতাম স্পর্শ করার মধ্য দিয়ে কম্পিউটার ব্যবসায়ে প্রবেশ করেন। তিনি দেশের সংবাদপত্র, প্রকাশনা ও মুদ্রণ শিল্পের ডিটিপি বিপ্লবের অগ্রনায়ক। তিনি বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ও বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র স্বীকৃত ও প্রমিতকৃত কম্পিউটারের বাংলা কিবোর্ড বিজয়-এর জনক। তিনি কম্পিউটারের সর্বাধিক জনপ্রিয় বাংলা সফটওয়্যার বিজয়-এরও উদ্ভাবক। তিনি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির নির্বাহী পরিষদের সদস্য, কোষাধ্যক্ষ ও সভাপতি (চারবার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসে) বেসিস-এর প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও সভাপতি (একবার) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ ফোরামের আহ্বায়ক ও ই-ক্যাব-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি নিজ গ্রামে উচ্চবিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়, স্নাতকোত্তর কলেজ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি দেশব্যাপী আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তককে ডিজিটাল কনটেন্টে রূপান্তর করেছেন। তিনি দেশে অনলাইন ইন্টারনেট এবং কম্পিউটারকে শুল্ক ও করমুক্ত করার আন্দোলনের অগ্রণী নেতা। একই সাথে তিনি দেশ থেকে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার রপ্তানির প্রণোদনা পাওয়ার আন্দোলনেও সফল হন। মোস্তাফা জব্বার ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, উচ্চ-মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক পাঠ্য বইও লিখেছেন। কম্পিউটারের হাতেখড়ি, প্রাথমিক কম্পিউটার শিক্ষা, মাল্টিমিডিয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, কম্পিউটারে প্রকাশনা, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল ও কম্পিউটার অভিধান বইগুলো লিখেছেন। তাঁর লেখা অন্যান্য বইয়ের মাঝে আছে ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল সময়ের বর্ণমালা, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর, ডিজিটাল বিপ্লবীদের দেশে দেশে, জাতিরাষ্ট্রের পিতা বঙ্গবন্ধু, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব ও প্রসঙ্গকথা, বাংলা ভাষার ডিজিটাল যাত্রা (ডিজিটাল বাংলা), একাত্তর ও আমার যুদ্ধ, একুশ শতকের বাংলা বাঙালি ও বাংলাদেশ, কম্পিউটার কথকতা, নক্ষত্রের অঙ্গার ও সুবর্ণে শেকড়। আরও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘কম্পিউটার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ’, এটিএন বাংলার ‘কম্পিউটার প্রযুক্তি’ এবং চ্যানেল আই-এর ‘একুশ শতক’ অনুষ্ঠানের সহায়তায় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি কম্পিউটারকে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলেন। তিনি বেস্টওয়ে ভাষা ও সংস্কৃতি পদক, বেসিস আজীবন সম্মাননা, বিসিএস কম্পিউটার সিটি আইটি পদক ও আজীবন সম্মাননা, বিশ্ব মেধা সম্পদ সংস্থার স্বীকৃতি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের সম্মাননা, এসোসিও আজীবন সম্মাননা, উইটসা ডিজিটাল শিক্ষা পদক, চ্যানেল আই ফজলুল হক সম্মাননা, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সম্মাননা এবং পিআইবি সোহেল সামাদ পদকসহ ২৯টিরও বেশি পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ৮ সেপ্টেম্বর ২২